The Lazy Vlogger 07

  


      আমার ইউটিউব ভ্লগ [My Youtube Vlog] : 07

Prabir Kumar Das | The Lazy Vlogger

|| Page 01 |Page 02 |Page 03 |Page 04 || Page 05 || Page 06 || Page 07 ||



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০৩১ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 031]
১লা পৌষ, ১৪৩০; (18th December, 2023), সোমবার।


good afternoon বন্ধুরা। আমার আরও একটি নতুন ভ্লগে আপনাদের সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, আমি প্রবীর। দ্যা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলে ভাল আছেন। 

এখন আমি রয়েছি বাড়ির পাশের সেই বাঁশ বাগানে। আকাশের আলো দেখেই বুঝতে পারছেন, এখন বিকেল। ঘড়ির কাঁটা বলছে সাড়ে তিনটে বাজে। কিন্তু এরই মধ্যে দিনের আলো কমতে শুরু করেছে। আসলে এখন শীতকাল। দিনের আলো এখন বড় তাড়াতাড়ি কমতে শুরু করে দেয়। তাই ভাবছিলাম, বিকেলের এই মিষ্টি সোনালী আলোয় চলুন একবার মাঠ থেকে ঘুরে আসি। মাঠ অবশ্য এখন ফাঁকা। কোনও ফসল নেই। একটা ফসল ঘরে তোলার পর সকলে এখন নতুন করে জমিতে চাষ দেওয়া শুরু করেছে। তবে এখন বিকেল বেলা। সকালের মতো মাঠে এখন কেউ নেই। চারিদিক নিরিবিলি, শান্ত। কেবল পাখির আওয়াজ আর মাঝে মাঝে হাওয়ার শোঁ শোঁ শব্দ। চলুন একটু হেঁটে আসি। মনে হয় আপনাদের ভালো লাগবে। 

পশ্চিম আকাশে সূর্য অনেকক্ষণ হল ডুব দিয়েছে। দিনের আলো আস্তে আস্তে কমে এল। এদিকে আমিও হাঁটতে হাঁটতে ইস্কুল ঘরের ডাঙায় পৌঁছিয়ে গেছি। বেশ খানিকটা পথ হাঁটা হল। এই পুরো পথে আমার সাথে থাকার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। আশাকরি আপনারা সম্পূর্ণ পথের এই উপভোগ করেছেন। যাইহোক, এই পর্ব আর বেশী বড় করবো না। এখানেই শেষ করবো। সকলে ভালো থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০৩২ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 032]
২রা মাঘ, ১৪৩০; (17th January, 2024), বুধবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা, আমি প্রবীর, দ্যা লেজি ভ্লগার। কামদেবপুরের কথায় সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি সকলে ভালো আছেন। এই বিশাল সবুজের মাঝে আমিও বেশ ভালো আছি। আসলে হৈচৈ আর যান্ত্রিক চিৎকারের শহর থেকে অনেক দূরের এই শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে এসে আমি বেশ ভালোই থাকি। তবে এই পরিবেশে বেশী দিন থাকার উপায় তো কিছু নেই। ভালো না লাগলেও, রুজি রুটির তাগিদে সব যন্ত্রণা সহ্য করেই সেই ইট কাঠ পাথরের শহরেই ফিরে যেতে হয়। তাইতো সময় পেলেই নিজের বেঁচে থাকার অক্সিজেন জোগাড় করে নিতে বার বার ফিরে আসি এই সবুজের মাঝে। এই বিশাল বাঁশ বাগান, আম কাঁঠাল আর লিচুর বাগান, দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠ, ছোট দাদুর কাঁঠালতলা, কলঘরের জোড়া তালগাছ - এরা আমাকে সবসময় ডাকে। ... ... ... বৈদ্যনাথ কাকা, মনে হয় বাগানের কোনও বড় পাকুড় গাছ কেটে বিক্রি করে দেবেন। সেকারনেই আমাদের সামনের ঐ যে ভদ্রলোককে দেখছেন, উনি কাটার আগে গাছটা দেখতে এসেছেন। আপনারা শুনতেই তো পেলেন, কাকা বলে গেলেন যে তাল গাছের পাশেই যে পাকুড় গাছটা রয়েছে সেটার কথা। গাছ দেখার পরই আমাদের সামনের ভদ্রলোক, দাম ঠিক করে কাকাকে জানাবেন। অবশ্য আমি এখান থেকে তাল গাছটা যে কোথায় আছে সেটাই দেখতে পাচ্ছি না। পাকুড় গাছ তো অনেক দূরের কথা ... ... ... যাইহোক যা বলছিলাম, এই সবুজ বাগান আর মাঠ আমাকে সবসময় হাতছানি দিয়ে ডাকে। আর এদের ডাকে সাড়া দিয়ে, যতবারই আমি ফিরে আসি, ততবারই মনে হয় সবকিছুই যেন নতুন। আসলে ছোটবেলা থেকেই এই শান্ত নিরিবিলি গ্রাম আমার খুব প্রিয়। মনে আছে যখন ইস্কুলে পড়তাম, তখন গরমের ছুটি, পুজোর ছুটি আর ডিসেম্বর মাসে ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পর যে কয়েকদিন স্কুল ছুটি থাকতো, সেই কয়েকদিন আমার ঠিকানা হত এই গ্রাম। হয় তেঘড়িয়া তে মামার বাড়ি নতুবা সাহেবনগরে আমার নিজের দেশ। মাঝে মাঝে সময় পেলে নপাড়া তে আমার সেজকাকার শশুরবাড়িও ঘুরতে চলে যেতাম। এমনকি ছোটবেলায় এই কামদেবপুর গ্রামেও আমি বেশ কয়েকবার এসেছি। আসলে এই গ্রামেই আমার মামার শশুর বাড়ি। সেই সূত্রেই মামার সাথে তখন আমার এই গ্রামে আসা। তাই এখন এইসব চুপচাপের রাজ্যে ঘুরে বেড়ানোর সময় সেই সব পুরনো দিনের কথা মনে পরলে ভীষণ আনন্দ হয়।

যাইহোক এবার আজকের ভ্লগে ফেরত আসি। এখন সকাল প্রায় সাতটা। এখানে সকাল সাতটা মানে বেশ বেলা গড়িয়েছে। আসলে সকলে এখানে খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে। সকাল হয় ভোর চারটের সময়। আজ মেজ দাদুর বাঁশ বাগানে কয়েকজনের বাঁশ কাটতে আসার কথা। শীতের শেষের দিকে এখানে সকলেই প্রায় বাগানের মোটা পুষ্ট বাঁশ গুলো কেটে বিক্রি করে দেন। এর ফলে কিছু অর্থের উপার্জনও হয়, আবার বাগান পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার ফলে নতুন করে কোঁড়া বের হয়ে নতুন বাঁশ খুব তাড়াতাড়ি বড় হতে পারে। সেরকমই আজ মেজদাদু বাঁশ বিক্রি করবেন। সেকারনেই আমি বাগানে এসেছিলাম।  কিন্তু বাগানে এসে কাউকে দেখতে পেলাম না। হয়তো তাদের আসতে আরও কিছুটা দেরী হবে। তাই বাঁশবাগানে একা একা দাঁড়িয়ে না থেকে ছোট দাদুর কাঁঠালতলায় ঘুরতে এসেছিলাম। তবে এতক্ষণে মনে হয় সকলে বাঁশ কাটতে চলে এসেছেন। মাঝে মাঝে বেশ বাঁশ কাটার আওয়াজও পাচ্ছি। চলুন এবার সেদিকেই যাওয়া যাক।

এই তো বাঁশ কাটা শুরু হয়ে গেছে দেখছি। কিন্তু ... মাত্র একজন এসেছেন  !! আর কেউ নেই ? শুনেছিলাম তো তিন-চার জনের আসার কথা। অনেকগুলো বাঁশ কাটা হবে আজ।... ওঃ, মনে হয় আমার ভুল হচ্ছে। আরও বেশ কয়েকজনের গলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে সামনের যে বাঁশ ঝাড়টি রয়েছে, তার ওধারে বেশ কয়েকজন কাজ করছেন। অন্তত আরো তিনজনের গলার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। ... ... এই তো মনি ভাই মনে হয় এদিকে আসছেন ... ... ... সামনে দুটো বাঁশ কেটে পরে রয়েছে। পুরো কাটা হয়ে যাক, তারপর ওদিকে যাওয়ার চেষ্টা করা যাবে। এখন গেলে ওনাদের কাজের অসুবিধা হবে। বাঁশ তো কেবল গোঁড়া থেকে কাটলেই হবে না, বাঁশের গায়ে প্রচুর সরু সরু কঞ্চি থাকে। গোঁড়া থেকে বাঁশ কেটে নেওয়ার পর সবচেয়ে প্রথম কাজ হল ঝাড় থেকে বাঁশ বের করে আনা। এই কাজটা বেশ কঠিন। প্রতিটা ঝাড়েই বাঁশগুলো একে অন্যের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে বড় হয় যে, কোনও একটা বাঁশ কাটার পর ঝাড় থেকে বের করে নিয়ে আসা বেশ কষ্টকর। আর এই কাজে সব থেকে বাধার সৃষ্টি করে বাঁশের এই কঞ্চিগুলো। যে বাঁশের কঞ্চি যত বেশী, সেই বাঁশ ঝাড় থেকে বের করে নিয়ে আসা তত কঠিন। আবার এই কঞ্চিগুলো কোনো কাজেও লাগে না। ঝাড় থেকে বাঁশ গুলো বের করে নিয়ে এসে এনাদের প্রথম কাজ হল সব কঞ্চি গুলো আগে কেটে ফেলা। কঞ্চি কেটে বাঁশ পরিষ্কার করে নেওয়ার এই কাজটিকে এখানে সবাই বলেন "বাঁশ ঝোড়ে নেওয়া"। প্রতিটি বাঁশ ভালো ভাবে ঝোড়ে নেওয়ার পরই সেটা ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। তবে এখানে দেখছি বাঁশ গুলো সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ঝোড়ে নেওয়া হচ্ছে না, কঞ্চির গোঁড়া গুলো বাঁশের গায়ে লেগে থাকছে। হয়তো ওনারা যে কাজে বাঁশ গুলো ব্যবহার করবেন, সেখানে বাঁশ ভালো করে না ঝোড়লেও চলবে। তাই আর অত খাটাখাটনি করছেন না। ... ... বাগানের এই দিকটা বেশ অন্ধকার, বাঁশ এখানে বেশ ঘন। এছাড়া আরও বেশ কিছু বড় বড় গাছ এদিকটায় রয়েছে। তাই ছবি তুলতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। ওনারা কাজ করছেন বলে, আমি বাগানের সব দিকে যেতেও পারছি না। বেশী ঘোরাঘুরি করলে ওনাদেরই কাজের ক্ষতি হবে, সেটা উচিত হবে না। সেই জন্য ভিডিও মাঝে মাঝে বেশ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। আবার আমি এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যে সূর্যের আলো একেবারে সোজা আমার goproএর উপর পরছে। তাই ছবি মাঝে মাঝে ঝাপসাও হয়ে যাচ্ছে। এটুকু মানিয়ে নেওয়া ছাড়া কোনও উপায়ও নেই। যাইহোক কাজ চলতে থাকুক, আর আমিও তা ক্যামেরা বন্দি করার চেষ্টা করতে থাকি ... ...

এতক্ষণ আমি কোনও কথা বলছিলাম না। কেবল দাঁড়িয়ে ওনাদের কাজ দেখছিলাম। অবশ্যই আমার সাথে আপনারাও দেখছিলেন, ওনারা কিভাবে কাজ গুলো করছেন। বেশ পরিশ্রমের কাজ তো বটেই, তবে তারই সাথে দরকার ধৈর্য, বিচক্ষণতা আর অবশ্যই অভিজ্ঞতা। এই কাজে ভালো অভিজ্ঞতা না থাকলে, কখনোই কোনও সাধারন মানুষের পক্ষ্যে এ কাজ সম্ভব নয়। হয়তো আমিও একটু চেষ্টা করলে দা দিয়ে একটা বাঁশ গোঁড়া থেকে কেটে ফেলতে পারবো। কিন্তু ঝাড়ের অন্য বাঁশের কোনও ক্ষতি না করে অথবা যত সম্ভব কম ক্ষতি করে একটা বাঁশ ঝাড় থেকে বের করে নিয়ে আসা, আমার দ্বারা তো অসম্ভব। আমার মনে হয়, এই কাজ সবার দ্বারা সম্ভব নয়, এর জন্য বিশেষ অভিজ্ঞ হতে হবে। ... ... আরও একটা ব্যাপার, এখানেও ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, ওনারা কঞ্চি গোঁড়া থেকে ভালো করে ঝোড়ে নিচ্ছেন না। গোঁড়া, বাঁশের গায়ে লেগে থাকছে। দিন কয়েক আগে ভিকে মামা যেদিন বাঁশ কাটছিলেন, সেদিন আমি ওনার কাছে শুনেছিলাম, কঞ্চির গোঁড়া গুলো বাঁশের গায়ে রেখে দিলে বাঁশ নাকি একটু শক্ত থাকে, সহজেই রোদ-জলে পচে নষ্ট হয়ে যায় না। সেকারনেও হয়তো এনারা কঞ্চির গোঁড়া গুলো না কেটে রেখে দিচ্ছেন। ... অবশ্য ওনারা এব্যাপারে আমার থেকে অনেক বেশী অভিজ্ঞ। কঞ্চির গোঁড়া কতটা রাখতে হবে আর কতটা কেটে বাদ দিতে হবে এটা ওনারা আমার থেকে বেশী ভালো বুঝবেন। ... ... ...  বেশ কয়েকটা বাঁশ কাটা হয়ে গেছে। ওদিকে আরও কাটার কাজ চলছে। মনে হয় ভালোই সময় লাগবে। যাই হোক আর বেশী বকবক করে লাভ নেই। তার চেয়ে বরং চলুন, চুপচাপ ওনাদের কাজ দেখি। ... ...

এই তো মেজ দাদুও দেখছি টুকটুক করে লাঠি হাতে, হাঁটতে হাঁটতে বাগানে চলে এসেছেন। তাঁর নিজের বাগানের বাঁশ কাটা হচ্ছে। তাই আর ঘরে বসে থাকতে পারেন নি।  প্রায় নব্বই ঊর্ধ্ব এই মানুষটিকে দেখলে আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। অশক্ত শরীর, চোখে ঠিক মতো দেখতে পান না, লাঠি হাতে হাঁটতে গেলেও পা টলে তবুও কোনও সময় ঘরে বসে থাকতে পারেন না। এখনও এই বয়সে নিয়মিত প্রতিদিন মাঠে যান, মুনিস বা রেজা কাজ করলে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের কাজের তদারকি করেন, সব কাজ ঠিক মতো হল কিনা দেখে নেন, এমন কি কোনও কোনও দিন নিড়ানি হাতে মাঠে নেমে ভুঁই নিড়াতেও দেখেছি। শরীরে জোর কমে এলেও বা চোখের দৃষ্টি কমে এলেও স্মৃতিশক্তি বেশ প্রবল। এখনও জমিতে কতজন মুনিস লাগবে, মুনিস কত টাকা মজুরী পাবে, জমিতে কতটা ফলন হল, কত টাকায় বিক্রি হবে সব তাঁর মুখস্ত। আজও দেখুন, কয়েকটা ঝাড়ের বাইরের বাঁশ কাটা হয়েছে বলে উনি রীতিমতো সবাইকে বকাবকি করছেন। ... ...  ওনার ছেলে বা নাতিরা বার বার বারণ করেও ওনার মাঠে আসা থামাতে পারে নি। ... তবে আমার কিন্তু এই মানুষটিকে বেশ লাগে। এরকম অসাধারণ মনের জোর খুব কম মানুষের থাকে। আমার তো নেই, মনে হয় ওনার ছেলে বা নাতিদেরও মনের জোর এতো হবে না। ...

ঘড়ি বলছে,দুপুর প্রায় একটা বাজে। অনেক বেলা হয়েছে। তবে এদিকের বাঁশ কাটা এখনো চলছে। মনে হয় আজ পুরো কাজ শেষ হবে না। কালও সারাদিন বাঁশ কাটা চলবে। কলাবাগানের গাছ হেলে যাচ্ছে বলে ওনারা এইসব বাঁশ দিয়ে কলা গাছে ঠেকো দেবেন। মনে হয় বেশ বড় কলা বাগান। সেজন্য ওনাদের অনেক বাঁশ লাগবে। যাইহোক এখানে বাঁশ কাটা চলতে থাকুক। ওদিকে রাখু, ওদের আমবাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে কয়েকটা কলা গাছ লাগাবে বলছিল। আজ সকালে রাখু, বৈদ্যনাথ কাকার কলা বাগান থেকে কয়েকটা ছোট কলার "তেওড়" তুলে নিয়ে এসেছে। মনে হয় সেগুলোই বাগানে লাগাবে। সেকারনেই রাখু আর অরুণা এখন বাগানের দিকে গেল। মনে হয় ছোট কাকাও ওখানে আছেন। চলুন একবার সেদিকে যাই, দেখি ওখানে সকলে কি করছে ... ... ...

অজিত কাকাও বাগান থেকে চলে এলেন। কাঁধে বিশাল বড় শাবল। মনে হচ্ছে উনি এতক্ষণ কলা বাগানে কাজ করছিলেন। কাজ শেষে বাড়ির পথে পা বাড়ালেন। এদিকে বেলা বেশ গড়িয়েছে। রাখুদেরও কাজ প্রায় শেষ। ওরাও আর কিছুক্ষণ পরে বাড়ি ফিরবে। চলুন এবার আস্তে আস্তে বাড়ির পথে পা বাড়ানো যাক। ... ... মাঠে মনে হচ্ছে এখনও কাজ চলছে। ট্র্যাক্টর এর আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো কিশোর এখনও বাগানের ধারের জমি গুলো চাষ দিচ্ছে। এদিকে মেজ দাদুর বাঁশ বাগানে এখনও বাঁশ কাটার কাজ চলছে। লোকজনের কথা বলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। ওদের যা বাঁশ লাগবে, মনে হয় আজ পুরো কাজ শেষ হবে না। হয়তো আগামী কাল অথবা আগামী পরশু ওনারা আবার আসবেন। চেষ্টা করবো সেদিনও বাগানে উপস্থিত থাকার ... ... বাড়ির প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছি। এদিকে ক্যামেরার চার্জ ও শেষ হয়ে আসছে। তাই এই পর্ব এখানেই শেষ করবো। আজ সারাদিন আমার সাথে থাকার জন্য সকলকে অনেক ধন্যবাদ। আশাকরি আপনারা এই ভিডিও উপভোগ করেছেন। সকলে ভাল থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি সাবস্ক্রাইব করবেন। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০৩৩ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 033]
১৫ই মাঘ, ১৪৩০; (30th January, 2024), মঙ্গলবার।


© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০৩৪ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 034]
১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩০; (26th February, 2024), সোমবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা, কামদেবপুরের ডাঙা মাঠে সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাচ্ছি, আমি প্রবীর। দ্যা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। ... ... কয়েকদিন আকাশ মেঘলা থাকার পর, আজ সকালটা বেশ সুন্দর। সূর্যের মিষ্টি আলোয় চারিদিক ঝকঝক করছে। বেলার দিকে সূর্যের তেজ একটু বাড়লেও, এখনও তেমন বাড়েনি। গরম সহ্য করা যাচ্ছে। সেকারনেই ক্যামেরা সঙ্গে নিয়ে আমি বেড়িয়ে পরেছি। আজ আমি অনেক দূর যাব। সেখান থেকে চট করে বাড়ি ফেরা যাবে না। তাই মনে করে সব কটা ব্যাটারী সঙ্গে নিয়ে নিয়েছি। তবে মনে হয় আজ আমার একটু দেরী হয়ে গেল। আরও একটু আগে বেরতে পারলে ভালো হত। কারণ আজ কিন্তু হেঁটে যেতে বেশ সময় লাগবে।

বাঃ!! বাগানের এই নিরিবিলি পরিবেশটা আমার ভীষণ ভালো লাগে। কেবল কানে একটা হেডফোন, আর সঙ্গে ভৈরবী, হংসধ্বনি বা পিলু ব্যাস আর কিছু চাই না। আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই বাগানে বা ছোট দাদুর কাঁঠাল তলার মাচালে বসে কাটিয়ে দিতে পারি। আমি খেয়াল করে দেখেছি, কলকাতায় যে প্রবলেম গুলো সল্ভ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়, সেই একই প্রবলেম এখানে এসে আমি তার অর্ধেক সময়ে সল্ভ করে ফেলতে পারি। মনে হয়, এই শান্ত নিরিবিলি পরিবেশের জন্যই এটা সম্ভব হয়।

দুপাশের মাঠ এখন একদমই ফাঁকা। ফসল কাটার পর সকলে জমি ভালো করে চষে রেখে দিয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে জমিতে ভালো করে "জো" হলেই সকলে বীজ ফেলবেন। হারু কাকার দোকানে দেখলাম পাটের বীজ বিক্রি হচ্ছে। এখন মনে হয় পাট বোনার সময়। এই জমি গুলোতেও মনে হয় পাট বোনা হবে।

আমার সামনে ঐ যে রতন কাকা, হাঁটতে হাঁটতে চলেছেন। উনি তো দেখছি কাঁঠাল তলার দিকে যাচ্ছেন। যদিও আমি আজ যাব রাখু দের কলঘর পেরিয়ে সেই বাস্ততলার দিকে। বাড়ি থেকে বেরতেও একটু দেরী হয়েছে, তবুও ভাবছি চলুন একবার বুড়ো কাকাদের কাঁঠালতলা ঘুরে যাই। রতন কাকা সেখানে কি করছেন একবার দেখে আসি। তারপর না হয় দূরের মাঠে যাওয়া যাবে।

এই তো কথা বলতে বলতেই মাচালে চলে এসেছি। তবে মাচাল ফাঁকা। রতন কাকাকে দেখছি না। কেবল মাচালের উপর বস্তায় করে মনে হচ্ছে সার রেখে দেওয়া আছে। হয়তো সামনের কোনও জমিতে সার দেওয়া হবে। বাঃ !! গাছ ভর্তি হয়ে দেখছি মুকুল এসেছে। কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে চারিপাশ মো মো করছে। মৌমাছি আর ভোমরার ঝাঁক চারিদিকে উড়ে বেড়াচ্ছে। এই গাছটায় প্রতিবছরই প্রচুর কাঁঠাল হয়। দেখেই তো বুঝতে পারছেন, অনেকগুলো ছোট ছোট এঁচোড় বিভিন্ন ডাল থেকে ঝুলছে। অবশ্য এতো সব এঁচোড় বড় হবে না। কিছু ঝোড়ে যাবে।

ঐ যে দূরে বৈদ্যনাথ কাকার কলা বাগান দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। রতন কাকা মনে হয় সেদিকেই গেছেন। আমি ভুলও হতে পারি, অন্য কোনও জায়গাতেও যেতে পারেন। বাম দিকের এই যে বিশাল জঙ্গলটা দেখা যাচ্ছে ওটাও মনে হয় বৈদ্যনাথ কাকার। অবশ্য সঠিক জানি না, আন্দাজেই বলছি। ... ওই জঙ্গলে বেশ কয়েকটা শিয়াল থাকে। শেষ বিকালে এখানে বসে থাকলেই ওদের দেখতে পাওয়া যায়। যাই হোক, এখানে আর বেশীক্ষণ অপেক্ষা করবো না। চারিদিকে প্রচুর মৌমাছি উড়ে বেড়াচ্ছে। আমার আবার মৌমাছি কে একটু ভয় লাগে। ওদিকে ইয়াসিন আর মাসিদুল মনে হয় এতক্ষণে মাঠে চলে এসেছে। রোদের তেজও আবার একটু একটু করে বাড়ছে। তাই চলুন পা চালিয়ে সেদিকেই যাই।

এদিকের আল তো দেখছি বেশ নরম। তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। পা টিপে টিপে চলতে হচ্ছে। বাম দিকের জমিতে ধান বোনা রয়েছে। দাঁরাতেও অল্প জল রয়েছে। সেই জন্যই আল একটু ভিজে। ধান চাষে প্রচুর জল লাগে। ধানের জমিতে চাষের প্রথম দিকে সবসময় জল ভর্তি করে রাখতে হয়। না হলে গাছ হলুদ হয়ে যায়। ... জমিতে ধান লাগানো থাকলে সেই জমির আল দিয়ে হেঁটে যেতে তাই আমার একটু অসুবিধা হয়। আলে কাদা থাকে বলে, যে কোনও মুহূর্তে পা পিছলে আছাড় খাওয়ার সম্ভাবনা। সাবধানে পা ফেলতে হয়। যাইহোক এই আলটুকু আমি আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে যাই। পুরোটা পথে ক্যামেরা অন করে রাখলে ব্যাটারি শেষ হয়ে যেতে পারে। আগে আমি ইয়াসিন দের কাছে পৌঁছাই, তারপর আবার ক্যামেরা অন করা যাবে। এই দেখুন, এদিকের পুরো মাঠ ধান লাগানো।

মাসিদুল আর ইয়াসিন, দুই ভাই। দুজনেই ওদের জমিতে লঙ্কা তুলছে। ছোট ছোট হাতে, কিন্তু নিপুন ভাবে। মাসিদুল বড়, আর  ইয়াসিন ওর ছোট ভাই। বড় ওয়ান'এ পড়ে। অবশ্য ইয়াসিন মাঠে লঙ্কা তুলতে আসেনি। ও ঠিকমতো বেছে লঙ্কা তুলতে পারেও না। জালি লঙ্কা গুলো তুলে দেয়। ওর যা বয়স, সেটাই স্বাভাবিক। আজ সকালে ও স্কুলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে, এখন ও দাদার জন্য, মাঠে টিফিন কৌটো করে খাবার নিয়ে এসেছে। মাসিদুলের একটি ছোট বোনও আছে। ইগনিমা খাতুন। সবার ছোট। ইগনিমা "খিচুড়ি স্কুল"এ পড়ে।

মাসিদুল একটু বিরতি নিয়েছে। মনে হয়, ও খেতে গেল। ইয়াসিন'ও ওর দাদার সাথে গেল। চলুন, চট করে ওদিকে একবার যাওয়া যাক। খেতে বসার আগে, ওদের সাথে আরও একটু ভালো করে আলাপ করে আসি।

এদিকের এই মাঠগুলো বাস্তুতলা গ্রামের কাছাকাছি। বেশিরভাগ জমির মালিক বাস্তুতলা থাকেন। মাসিদুলদের বাড়িও বাস্তুতলা গ্রামের বড় বটগাছের কাছে। কিন্তু ওর স্কুল ড্যাংড্যাঙে গ্রামে। আজ মাসিদুল স্কুল যায়নি। মাঠের লঙ্কা তুলবে বলে ও আজ একদিনের জন্য স্কুলে ছুটি নিয়েছে। কাল থেকে ও আবার স্কুল যাবে। ... ...  এদিকে রোদের তেজ একটু একটু করে বাড়ছে। সেইজন্য মাসিদুল, ভাইকে এই গরমে মাঠে বসে না থেকে,বাড়ি চলে যেতে বলছে। কিন্তু ইয়াসিনের দাবী অন্য, বেশ জোরালো দাবী। ও দাদার কাছে ৫ টাকা চাইছে, মোট কুড়িটা লঙ্কা দাদাকে তুলে দিয়েছে, তার পারিশ্রমিক হিসাবে। দাদার কাছে ছোট ভাইয়ের আবদার বলতে পারেন। দাদা অবশ্য ছোট ভাইয়ের আবদার মেনেও নিয়েছে, বিকেল বেলা ভাইকে পাঁচ টাকা দেবে - এই শর্তে।

বেলা অনেক বেড়েছে। তার সাথে রোদের তেজ। ইয়াসিন এবার বাড়ি যাবে। কিন্তু তার আগে নিজের প্রিয় ছাগলের জন্য মরিচের জমি থেকে ইয়াসিন কিছু শোঁয়া ঘাস তুলে নিয়েছে। এই ঘাস নাকি ওর ছাগলের খুব প্রিয়। অবশ্য ঘাস খুব একটা বেশী নয়, সামান্যই। বাড়িতে ছাগলের জন্য এক বোড়া ঘাস রয়েছে। এই ঘাসটুকু ইয়াসিন প্রিয় পোষ্যর জন্য শখ করে নিয়ে যাচ্ছে। এই যে, দুই ভাই ঘাস গুলো পরিষ্কার করে কেটে নিয়ে আঁটি বাঁধছে।

সবজি চাষে পরিশ্রম একটু বেশী। সব সময় গাছ যত্নে রাখতে হয়। পরিমান মতো জল দেওয়া, সার দেওয়া, ভিটামিন তেল দেওয়া, পোকা মারার বিষ তেল দেওয়া, এসব চলতেই থাকে। একটু এদিক ওদিক হলেই ফলন কমে যায়। আর সব থেকে পরিশ্রমের কাজ হল, একদিন দুদিন অন্তর ফসল তুলে নিয়ে গিয়ে পাইকারি হাটে অথবা আড়তে গিয়ে বিক্রি করে আসতে হয়। না হলে জমিতে ফসল পড়ে থেকে, বেশি পেকে যায় বা শুকিয়ে যায়, যার কোনও দাম পাওয়া যায় না। ধান, গম বা রবি শস্য চাষে এই খাটুনি নেই। তিন-চার মাস পর ফসল পেকে গেলে একবারে ফসল কেটে-ঝেড়ে-বেছে ঘরে তোলা যায়। সেকারনে সবজি চাষে লোকবল বেশি লাগে, সবার দ্বারা সবজি চাষ করা হয় না। তবে সবজি চাষে পরিশ্রম যেমন আছে, অর্থ উপার্জনও অন্য চাষের তুলনায় বেশি হয়।

আজকের মতো লঙ্কা তোলা শেষ। বেলা অনেক হয়েছে। যেটুকু লঙ্কা তোলা হয়েছে, তা আজ বিকেলের মধ্যেই দাঁইহাটার আড়তে পৌঁছাতে হবে। না হলে লঙ্কা পচে যাবে। দাম পাওয়া যাবে না। দশ কাঠা জমির ভাটির একধারে আজ ছয় পাই লঙ্কা তোলা হল। প্রায় দেড় মন, পৌনে দু মন লঙ্কা হবে। নষ্ট হলে অনেক টাকা লস। তাই সকলে তাড়াহুড়ো করছেন। বাড়ি ফিরে স্নান খাওয়া দাওয়া করেই আবার আড়তে যেতে হবে। ... ... ওদিকে আবার ওমের দাদু "বুড়িমা" এর জমিতে চাষ দেবেন বলে জল ধরিয়েছেন। রফিক ভাইও সঙ্গে আছেন। পাশের একটি জমি রফিক ভাই চাষ করেন। মনে হয়, ভাইও সেই জমিতে জল নেবে। এই জমিটা রাখুদের কলঘর থেকে অনেক দূরে। পাইপ ফেলে জল দিতে গেলে অনেক পাইপ লাগে। সেকারনেই ওমের দাদু, কাছাকাছি অন্য একজনের কল থেকে পাইপে করে জল নিচ্ছেন। চলুন এবার সেদিকে যাওয়া যাক।

সামনের জমিটা, মানে যেটাতে জল ভর্তি হয়ে গেছে, সেটা মনে হয় ওমদের। আর তার পাশের জমিটা, মানে সে জমিটায় রফিক ভাই এখন জল দিচ্ছে, সেটা মনে হয় রাখুদের। কিন্তু রাখু ওই জমিতে এবার চাষ করছে না। ওটা রফিক ভাইকে দিয়েছে চাষ করতে। সেজন্য রফিক ভাইও জমিটা জল দিয়ে ভিজিয়ে নিচ্ছে। বাঃ কত বক! জমিতে পোকা খেতে চলে এসেছে। জমিতে জল দিলেই শুকনো মাটির ভেতর থেকে পোকা গুলো বেরিয়ে আসে। ... ... যেটা বলছিলাম, রবি চাষের পর জমি বেশ কয়েকদিন খালি পরেছিল। এতদিন জমিতে জল ছিলনা বলে মাটি ফেটে শুকনো হয়ে গিয়েছিল। তাই জমিতে জল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হল। কয়েকদিন পরে জমিতে ঠিকমতো "জো" হলে ভালো করে চাষ দিয়ে নতুন ফসল বোনা হবে। এখন তো মনে হয় ধান লাগালে নামলা হয়ে যাবে। তাই মনে হচ্ছে দুটো জমিতেই একসাথে পাট লাগানো হবে। অথবা আমি ভুলও হতে পারি, দুজনেই হয়তো তিল বুনবেন।

একটানা হেঁটে বিশাল মাঠ পেরিয়ে, আমরা কাঁঠালতলা পৌঁছে গেছি। কেবল সামনের দুটো মাঠ পার হলেই বাড়ি পৌঁছে যাব। এই দুপুরে মাঠে কেউ কোথাও নেই। চারিদিক ফাঁকা। এমনিতেই মাঠে এখনো নতুন চাষ শুরু হয়নি। তাই লোকজন একটু কম। তার উপর এখন প্রায় পৌনে একটা বাজে। সাথে ঠাঠা রোদ। এই গরমে কে আর মাঠে বসে থাকবে? সকলেই প্রায় বাড়ি পৌঁছে বিশ্রাম করছেন। আমরাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পা চালিয়ে বাড়ি চলেছি।

গরমে একটানা অনেকটা পথ হেঁটে এলাম। এবার জল তেষ্টা পেয়েছে। বাড়ি পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিয়ে আগে জল খেতে হবে। অনেকক্ষণ রোদে ছিলাম। তাই সঙ্গে সঙ্গে জল খেলে আবার ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। তবে আজকে অনেকটা পথ হাঁটা হয়েছে। সকালে একটু ভারী জলখাবার খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এতোটা রাস্তা হেঁটে অনেকটাই ক্যালোরি বার্ন করানো গেল। যাই হোক প্রায় বাগানের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। একবার বাগানে ঢুকে পরলে অতটা রোদ আর লাগবে না।

কাঁঠালতলা, আমবাগান পেরিয়ে চলে এসেছি। সামনে বাঁশ বাগান পেরলেই বাড়ি। এদিকে মারুফ ভাইরা দেখছি এখনো বাগানে বসে রয়েছেন। মনে হচ্ছে ওদের ট্র্যাক্টর এখনো আসেনি।

বাড়ি চলে এসেছি। এই পর্ব এখানেই শেষ করলাম। সাথে থাকার জন্য সকলকে অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। পর্ব ভালো লাগলে, প্লীজ লাইক, শেয়ার, সাবস্ক্রাইব করবেন। আবার দেখা হবে। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০৩৫ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 035]
২৮শে চৈত্র, ১৪৩০; (11th April, 2024), বৃহস্পতিবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা, কামদেবপুরের কথায় সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাচ্ছি, আমি প্রবীর। দ্যা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আর, আমিও বেশ ভালো আছি। আসলে আজ ওয়েদারটা ভীষণ ভাল, না ঠাণ্ডা না গরম। চলুন, কামদেবপুরের ডাঙা মাঠে শুরু করা যাক আরও একটা নতুন ভ্লগ।

অজিত কাকা। বেশ জোরে হেঁটে চলেছেন। আসলে আজ কাকা খুব ব্যস্ত। কলাবাগানে প্রচুর কাজ। তাই এতো তাড়াহুড়ো।

যাইহোক যেটা বলছিলাম, আজকের ওয়েদার বেশ ভাল। ঘন নীল আকাশে ঝকঝকে সূর্যের সোনালী রোদ। সঙ্গে চেনা অচেনা বিভিন্ন পাখির মিষ্টি আওয়াজ। চারিদিক আলোয় ঝলমল করছে। তারই মাঝে বাঁশ বাগান পেরিয়ে আম বাগানের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমি চলেছি বুড়ো কাকাদের কাঁঠাল তলার মাচালে। অজিত কাকাও সেদিকেই যাবেন। আগের একটি পর্বে আপনাদের দেখিয়েছিলাম, অজিত কাকা মাচালের পাশেই বৈদ্যনাথ কাকার পুরনো কলাবাগান কেটে পরিষ্কার করছিলেন। আজ সেই বাগানেই কাকা নতুন কলার চারা বসাবেন। ট্র্যাক্টর এর আওয়াজ এখনো শুনতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, কিশোর জমি চষা এখনও শেষ করতে পারেনি। চলুন তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে সেদিকেই যাই।

হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে পৌঁছে গেছি। অজিত কাকা'রা দেখছি এখনো কাজ শুরু করতেই পারেনি। কিশোর এখনো ট্র্যাক্টর দিয়ে জমিতে চাষ দিচ্ছে। তবে প্রাথমিক টানা ফাল দিয়ে জমি চষা মনে হচ্ছে শেষ হয়েছে। কারন ট্র্যাক্টর এর সাথে এখন দেখছি "রোটর মেশিন" লাগানো। টানা ফাল দিয়ে তাড়াতাড়ি জমি চষা গেলেও, এই মেশিন লাগিয়ে জমি চষতে একটু সময় বেশি লাগে। পুরনো ফসল কেটে নেওয়ার পর, কোনও জমিতে নতুন করে চাষ শুরু করলে প্রথমে টানা ফাল দিয়েই চাষ দিয়ে নিতে হয়। অনেকটা "হাল-লাঙ্গল" দিয়ে জমি চষে নেওয়ার মতো। এতে জমি সম্পূর্ণ খুঁড়ে মাটি আলগা করে নেওয়া যায়। তারপর সেই জমিতে রোটর মেশিন চালানো হয়। সাবেকি পদ্ধতির হাল দিয়ে চষার পর, অনেকটা মই দিয়ে জমি চষে নেওয়ার মতো। রোটর মেশিনে জমির উপরের মাটি গুড়ো করে, জমিতে মই দেওয়ার মতোই প্রায় সমান করে নেওয়া যায়। কিশোর এখন সেই কাজটাই করছে। সেকারনেই ট্র্যাক্টর আস্তে চলছে। আবার জমি সমান করে না নিলেও সার বেঁধে কলা গাছ লাগাতে বেশ অসুবিধা হয়। তবুও তো এটা শুকনো জমি। ধানের মতো কাদা জমি হলে আরও বেশি সময় লাগত। তাই অপেক্ষা না করে উপায়ও নেই। এইতো অজিত কাকারা অপেক্ষা করতে করতে পাশের জমিতে বসেও পরেছেন। তবে কিশোরের কাজ মনে হচ্ছে প্রায় শেষের পথে। আর একবার টানা দিয়েই ও এবার ট্র্যাক্টর নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবে।

কাজ শেষ করে রোটর মেশিন নিয়ে কিশোর বাড়ির পথে এগোল। হয়তো জলখাবার খেয়ে, ও আবার হুলার মেশিন নিয়ে ডাঙা মাঠে আসবে। মাঠে কোনও কোনও জমিতে এখনো ধনে রয়েছে। সেগুলোই মনে হয় ও হুলার করতে আসবে। আজকের মতো এখানে ট্র্যাক্টর এর কাজ শেষ। এবার শুরু হবে অজিত কাকাদের কাজ। পুরো জমিতে মাপ করে আগে গর্ত বা "খাদ" করে নিতে হবে।

জমিতে কলা গাছ বসাতে হয়, সারি দিয়ে। একটা গাছের থেকে অন্য গাছের নির্দিষ্ট সমান দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। না হলে গাছ ঠিক মতো বাড়তে পারে না। এমনিতেই কলা গাছের এক একটা পাতা বিশাল বড়, বেশ জায়গা নেয়। তাই গাছ ঠিক মতো বড় হতে না পারলে, কলার কাঁদিও বড় হয় না, বা কলাও পুষ্ট হয় না। ছোট কাঁদির দাম কম। আবার কলা মোটা পুষ্ট না হলেও ঠিকমতো দাম পাওয়া যায় না। ফলে বাগান করে চাষির লোকসান হয়। সেই কারনেই নতুন বাগান করার সময় দুটি গাছের মধ্যে যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব থাকে, সেব্যাপারে চাষিরা অতিরিক্ত সজাগ থাকেন। এখানেও অজিত কাকারা দড়ি দিয়ে মেপে, কোথায় এবং কতটা দূরত্বে চারা বসাবেন সেটা আগে ঠিক করে নিলেন। এরপর গর্ত বা খাদ করার পালা। নির্দিষ্ট সমান দূরত্ব বজায় রেখে গর্ত করে নিয়ে, প্রতিটা গর্তে একটা করে গাছ লাগানো হয়। ... ... একটা একটা করে গর্ত করার এই কাজটা বেশ খাটুনির। জমিটাও বেশ বড়। অনেকগুলো গাছ ধরবে। তাই অনেকগুলো গর্ত করতে হবে। এদিকে বেলা যত বাড়ছে, রোদের তেজও তত বাড়ছে। চড়া রোদে ডেরো দিয়ে কুপিয়ে একটা একটা করে খাদ করতে একটু বেশি খাটুনি হবে। সেকারনেই অজিত কাকারা চেয়েছিলেন সকাল সকাল এসে তাড়াতাড়ি গর্ত গুলো করে নিতে। কিন্তু কিশোরের জমি চষতে একটু সময় লেগে যাওয়ায় গর্ত করার কাজে একটু দেরী হয়ে গেছে। দুজনে তাই তাড়াহুড়ো করছেন।

লম্বায় জমির একদিকে খাদ করা শেষ হয়েছে। এবার আড়ায় খাদ করতে হবে। সেইমতো অজিতকাকারা আগে দড়ি দিয়ে আড়া আলে চিহ্নত করে নিলেন, বা marking করে নিলেন। এবার ডেরো দিয়ে আড়া আলে খাদ গুলো করে নিতে হবে। এরপর রয়েছে বাকি জমির পুরোটা গর্ত করে নেওয়ার কাজ। অবশ্য লম্বায় এবং আড়ায় খাদগুলো একবার করে নিলে, সেই খাদের লাইন ধরে ধরে বাকি পুরো জমিতে গর্ত করে নেওয়া যায়। তারপরের কাজ হল সার দেওয়া। প্রতিটা খাদে সার ফেলতে হবে। ইউরিয়া ছাড়া যে কোনও দানা সার।  গাছ লাগানোর আগে মাটির তলায় এই ভাবে সার দেওয়ার পদ্ধতিকে এখানে সকলে বলেন "চাপান সার দেওয়া"। অবশ্য তার আগে জমির মাটি তৈরির সময় অজিত কাকারা পাশের পুকুর থেকে পাঁক মাটি তুলে এনে জমিতে দিয়েছিলেন। পুকুরের পাঁক মাটি নাকি কলা গাছের পক্ষে আদর্শ। এতে নাকি গাছের ফলন অনেক গুণ বেড়ে যায়। আর যে "চাপান সার" দেওয়া হল সেটা নাকি মাটি শোধন করার জন্য। এই জমিতে আগেও কলা বাগান ছিল। একই জমিতে বার বার একই ফসল লাগালে অনেক সময় গাছ ঠিক মতো বাড়তে চায় না, ফলে ফলন কমে যায়। সেই সমস্যা দূর করতেই চাষিরা পুরনো বাগান ভেঙে নতুন করে বাগান করার আগে মাটি শোধন করে নেন।

গোটা জমিতেই প্রায় গর্ত করা শেষ। অজিত কাকা এক এক করে প্রতিটা গর্তে সার দিয়ে চলেছেন। ডাঙামাঠের এদিকে এখন নতুন করে চাষ শুরুর সময়। চারিদিকের মাঠ এইসময় প্রায় ফাঁকা। সকলে নতুন করে ফসল লাগাবেন বলে জমি চষে রেখে দিয়েছেন। তারই উপর দিয়ে কিশোরের ট্র্যাক্টর নিয়ে মাঠের দিকে আসার অস্থায়ী রাস্তা। ... ... ...  যাইহোক বেলা আস্তে আস্তে বাড়ছে। দুজনের একজন, যে কয়েকটা খাদ করা বাকি আছে, সেই কয়েকটা তাড়াতাড়ি করে নিচ্ছেন, আর বাকি জন ব্যস্ত প্রতিটা খাদে দানা সার দিতে। অবশ্য সার দেওয়া শেষ হলে, অর্ধেক কাজ সম্পূর্ণ হবে। এরপর আরও কাজ রয়েছে। প্রতিটা খাদে একটা একটা করে কলার চারা বসিয়ে, খাদগুলো আবার মাটি দিয়ে বুজিয়ে দিতে হবে। তারপর জমিতে জল দেওয়ার পালা। ... ...   এই রোদের মধ্যে একটা একটা করে গর্ত করা, ভালোই পরিশ্রমের কাজ। অবশ্য এখানকার মানুষগুলো বেশ পরিশ্রমীও বটে। একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, প্রতিটা গর্ত করতে প্রায় সাত থেকে আটবার ডেরো দিয়ে মাটিতে কোপ মারতে হচ্ছে। এবং হালকা ভাবে নয়, বেশ শক্তিশালী কোপ। সাত আট কোপেই প্রায় একঝুড়ি করে মাটি উঠে আসছে। মাঝে আমি নিজে একবার চেষ্টা করে দেখছিলাম গর্ত করতে পারি কিনা। তবে আমার পারফরমেন্স বেশ হতাশ জনক। আমার তো এক একটা গর্ত করতে প্রায় পনেরো বার ডেরো দিয়ে কোপ মারতে হচ্ছে। যদি পুরো জমিতে আমাকে গর্ত করতে হত, তাহলে আমার প্রায় তিন দিন সময় লাগতো। তারপর অবশ্য আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যেত কিনা জানিনা। অথবা পাওয়া গেলেও নিশ্চয় কোনও হসপিটালের বিছানায়।  যাইহোক এদিকের কাজ চলতে থাকুক। চূড়ার দিকের খাদ গুলো কাটা শেষ করে এবং সব খাদে হাফ চামচ করে সার দেওয়ার পর অজিত কাকারা মনে হয় পাশের আমবাগানে একটু বিশ্রাম নেবেন। এখানে কিছুক্ষণের জন্য আমিও বিরতি নিচ্ছি। তবে ফিরে আসছি অল্প সময়ের মধ্যেই। ... ... ...

মনে হচ্ছে কিশোর ট্র্যাক্টর নিয়ে আসছে। সাথে হুলার মেশিনও আসছে। ও ট্র্যাক্টর নিয়ে সামনের মাঠে যাবে। সেখানে জমিতে এখনো ধনে জড়ো করা রয়েছে। সেখানেই কিশোর ধনে হুলার করতে যাবে। এদিকে এই জমির পুরোটাই গর্ত করা হয়ে গেছে। এমনকি কোনও কোনও গর্তে চারাগাছও রাখা হয়ে গেছে। সেগুলো বাঁচিয়েই কিশোরকে ট্র্যাক্টর নিয়ে এগোতে হবে। গর্ত বুজে গেলে অজিত কাকাদের আবার কাজ বেড়ে যাবে। অজিত কাকা দেখলাম, এব্যাপারে একটু আপত্তিও জানালো।

অজিত কাকারা ওদিকে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিক। সেই ফাঁকে চলুন আমরা পাশে কিশোরদের এইযে আরও একটা কলাবাগান রয়েছে, সেখান থেকে ঘুরে আসি। এই বাগানের সব গাছ গুলোই দেখছি বেশ লম্বা। মনে হয় এটা দুধসর কলার বাগান। অজিত কাকা আজ সকালেই বলছিলেন, আমাদের দেশিকলা কাঁঠালির মতোই দেখতে একরকম হাইব্রিড কাঁঠালি কলার এখানে খুব চাষ হয়। যেটা দুধসর কলা নামে পরিচিত। এই কলা স্বাদে গন্ধে বর্ণে একেবারে দেশি কাঁঠালি কলার মতো দেখতে। কেবল এদের কাঁদি গুলো দেশি কাঁঠালির তুলনায় বেশ বড় হয়। সেইজন্য দামও বেশি পাওয়া যায়। এই দেখুন, এই গাছে এক কাঁদি কলা ফলেছে। কত বড় মোচা দেখেছেন!! অবশ্য কাঁদি এখনো অনেক বড় হবে। মোচা থেকে এখনো বেশ কয়েকছড়া কলা ছাড়বে। মোচার এই সাইজ দেখলেই বেশ বোঝা যায়, যে কাঁদি কত বড় হবে। খেতে মিষ্টি হয় বলে এই কলার চাহিদাও বেশ বেশি। ... ... হারাধন দাদাও এই কলারই চাষ করেন। ওনার মুখেই শুনেছিলাম এই কলার চাষে পরিশ্রমও নাকি সিঙ্গাপুরি কলার তুলনায় কম হয়। সিঙ্গাপুরি কলার বাগান সবসময় পরিষ্কার করে রাখতে হয়। গাছের গোঁড়ায় যেন ঘাস বা আগাছা বেশি না জমে। কিন্তু এই বাগানে দেখুন, গাছের গোঁড়া আগাছায় ভর্তি। এমন কি কলার শুকনো পাতাগুলো পর্যন্ত গোঁড়ায় ভর্তি হয়ে রয়েছে। আবার সিঙ্গাপুরি কলার তুলনায় এই কলা চাষে সার জলও কম লাগে। অর্থাৎ খাটুনি এবং খরচা কম কিন্তু উপার্জন বেশি। তাই সকলে এই চাষটাই বেশি করেন। ... ... যাইহোক চলুন এবার অজিত কাকাদের কাছে যাওয়া যাক। এতক্ষণে হয়তো কাকারা বিশ্রাম নেওয়া শেষ করে আবার কাজে নেমে পরেছেন। ... ...

নতুন চারাগুলো যাতে রোদে শুকিয়ে না যায়, সে কারনে আমবাগানের ছায়ায় বিচুলি চাপা দিয়ে রেখে দেওয়া ছিল। সেখান থেকে দুই হাতে করে চারা গুলো নিয়ে অজিত কাকারা একটা একটা করে প্রতি গর্তে রাখছেন। এইভাবেই পুরো জমির সবকটা গর্তে সারি দিয়ে আগে গাছ গুলো সাজিয়ে নিচ্ছেন, যাতে কোনও জায়গায় কম-বেশি না হয়ে যায়।

বৈদ্যনাথ কাকার ফোন এলো। হয়তো বেচবার জন্য কোনও ফসলের দরদাম চলছে। এই বাগানটা কিন্তু বৈদ্যনাথ কাকার। কিশোর, বৈদ্যনাথ কাকারই ছেলে। আর অজিত কাকা বৈদ্যনাথ কাকার সব বাগান সহ এই বাগানেরও পরিচর্চার কাজ করেন। যাই হোক অজিত কাকারা হেঁটেই চলেছেন। হাঁটতে হাঁটতে একবার করে আমবাগানে যাওয়া, আর সেখান থেকে দুই হাতে করে আট-দশটা নতুন চারা নিয়ে এসে, একটা একটা করে প্রতি গর্তে সাজিয়ে দেওয়া। তারপর অবশ্য প্রতিটা গর্ত মাটি দিয়ে বুজিয়ে দিতে হবে। ব্যাস, আপাতত আর কিছু নয়, এই কাজে কেবল দরকার অসম্ভব ধৈর্য, নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা আর রোদ জল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রচণ্ড পরিশ্রম করার ক্ষমতা। তবে এতো পরিশ্রম করার পরেও এনারা ফসলের দাম ঠিক মতো পান না। এখানেই দেখুন না, এক কাঁদি দুধসর কলা বিক্রি করে খুব বেশি হলে বৈদ্যনাথ কাকার উপার্জন, চারশো থেকে সাড়ে চারশো টাকা। তার মধ্যে থেকেই আবার চাষের খরচ জোগাড় করতে হবে। আর এই এক কাঁদি কলা আমরা শহরে কিনি অন্তত সাড়ে আটশো থেকে নয়শো টাকায়। ডবলেরও বেশি। এই যে অতিরিক্ত টাকা, সেটা কার পকেটে যে যায় কে জানে !!  ... ... যাই হোক অজিত কাকাদের জন্য বাড়ি থেকে জলখাবার এসেছে। মনে হল, ভাত আর আলুর তরকারি। প্রচণ্ড পরিশ্রমের কাজ। সেজন্যই, জলখাবারও বেশ ভারী। ওনারা আম গাছের ছায়ায় বসে খাওয়া দাওয়া করে নেবেন। আমি আর সেদিকে গেলাম না, তাদের বিব্রত করা ঠিক হবে না। বরং সেই ফাঁকে আমিও বাড়ি থেকে একটু খেয়ে আসি। বেলা অনেক হয়েছে। এখনো জলখাবার খাওয়া হয়নি। খিদেও বেশ পেয়েছে। চলুন কলা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে যে পথে ট্র্যাক্টর এলো সেদিক দিয়ে চলে যাই। এই বাগান টা মনে হচ্ছে সিঙ্গাপুরি কলার বাগান। গাছ গুলো দেখছি বেশ ছোট ছোট। আর বাগানটাও কি পরিষ্কার, কোনও শুকনো পাতা জমিতে নেই। তবে মনে হচ্ছে বাগানে আজ জল দেওয়া হয়েছে। এখান দিয়ে বাড়ি ফেরা যাবে না। মাটিতে কাদা হবে, পা ডুবে যাবে। চলুন মাঠের আলপথ ধরি, ঘুরপথেই যাই। খুব বেশি দূর তো নয়, সামনেই বুড়োকাকাদের কাঁঠালতলা ওটা পেরলেই আর একটা মাঠ পরেই আম বাগান আর বাঁশ বাগান। তারপর বাড়ি। ... ... তাই এই পর্ব এখানেই শেষ করলাম। সাথে থাকার জন্য সকলকে অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। আর কামদেবপুরের এই মানুষ গুলোর কথা যদি শুনতে ভালো লাগে, তাহলে প্লীজ লাইক, শেয়ার এবং সাবস্ক্রাইব করবেন। আশা করি পরের পর্বে আবার দেখা হবে। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...





|| Page 01 |Page 02 |Page 03 || Page 04 || Page 05 || Page 06 || Page 07 ||