The Lazy Vlogger 05

 

      আমার ইউটিউব ভ্লগ [My Youtube Vlog] : 05

Prabir Kumar Das | The Lazy Vlogger

|| Page 01 |Page 02 |Page 03 |Page 04 || Page 05 || Page 06 || Page 07 ||



কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০২১ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 021]
২৮শে চৈত্র, ১৪২৯; (12th April, 2023), বুধবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা।  নতুন পর্বে সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি প্রবীর, দা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলে ভালো আছেন। চলুন, শুরু করি আরও একটা নতুন ভ্লগ। 

এখন আমি রয়েছি হারাধন দাদা'র বিল মাঠের ধারের কলা বাগানে। আজ সকাল থেকেই দেখছি দাদা আর দাদা'র ছেলে পীযূষ খুব ব্যস্ত। এখন সকাল প্রায় ন'টা বাজে। বেলা অনেকটাই বেড়েছে। সূর্য প্রায় মাথার উপরে উঠে এসেছে। তবে রোদের তেজ আজ বেশ কম। আকাশে এখনো অল্প অল্প মেঘ জমে আছে। আজ সকালেও বেশ বৃষ্টি হয়েছে, সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। তবে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল কাল সন্ধ্যা থেকে। তার আগে ভীষণ ঝড়। কালবৈশাখী। ঝড় কিন্তু খুব বেশীক্ষণ স্থায়ী ছিল না। বড়োজোর আধ ঘণ্টা হবে। এমনি তেই কালবৈশাখী খুব বেশি সময়ের জন্য স্থায়ী হয় না। কিন্তু কাল যে অল্প সময়ের জন্য ঝড় স্থায়ী ছিল, সেই সময়ের প্রবল বাতাসের দাপটে কাল কামদেবপুরে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কলা বাগান গুলো তে বেশ ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর গাছ ঝড়ে ভেঙে পরেছে। হারাধন দাদা আজ তাই কলা বাগান নিয়ে খুব ব্যস্ত। চলুন নিজের চোখেই দেখে আসি, বাগানের কি অবস্থা। 

বাঃ!! হারাধন'দার কলা বাগানের ভিতরে যে একটা বেশ বড় পুকুর আছে, সেটা তো আগে কোনোদিন খেয়াল করি নি। বেশ সুন্দর জায়গাটা। পুকুরের জলও বেশ পরিষ্কার, বড় কচুরিপানা একদমই প্রায় নেই। যদিও পুকুরটা বেশ বড়, তবে হারাধন দাদার অন্যান্য পুকুরের তুলনায় এটি কিন্তু ছোট। আমি যতদূর জানি, দাদার তিন-চারটে পুকুর আছে। তার মধ্যে দাদার বাড়ির সামনের পুকুরটা সবচেয়ে বড়। এর প্রায় পাঁচগুণ হবে। আর প্রতিটা পুকুরেই হারাধন দা মাছ চাষ করে। সঠিক জানিনা, তবে আমার মনে হয়, এই পুকুরেও মাছ রয়েছে। আসলে, এই অঞ্চলের বিল মাঠে যত গুলো পুকুর আছে, সবগুলোতেই প্রায় সারা বছর জল থাকে। তাই পুকুর গুলোতে সারাবছরই মাছ চাষ হয়। তবে বর্ষার সময় এই বিলমাঠের পুকুরগুলো নিয়ে একটু অসুবিধা হয়। বর্ষায় গঙ্গার জল বাড়লে এই মাঠ পুরো ডুবে যায়। সেই সময় যদি জলের চাপে পুকুরের পাড় ভেঙে যায় অথবা যদি বিলের জল পাড় ছাপিয়ে পুকুরে ঢুকে যায়, তাহলেই প্রবলেম শুরু। পুকুরের সব মাছ সেই জলের টানে ভেসে চলে যায়। সেই কারণেই যারা মাছের চাষ করে, তারা  বর্ষার আগে পুকুরের সব মাছ ধরে বিক্রি করে দেয়। হারাধন দা, আবার পুকুরের পাড়েও প্রচুর কলা গাছ লাগিয়েছেন। এতে অবশ্য  পুকুরের পাড় শক্ত হয়, সহজেই ভেঙে যায় না। কলা গাছ, পাড়ের মাটি শক্ত করে ধরে রাখতে সাহায্য করে। একনিতেই এই বাগানটা বেশ উঁচু। মনে হয়, পুকুর কেটে সেই মাটি দিয়েই এই বাগান উঁচু করে তারপর সেখানে কলা গাছ লাগানো হয়েছে, যাতে বর্ষার সময় বাগানে জল না জমে যায়। 

দাদার এই বাগানে দেখছি মৌমাছি'র ও চাষ হয়েছে। এই যে কলা গাছের গোঁড়ায় যে বাক্স গুলো দেখতে পাচ্ছেন, সেগুলোর ভেতর মৌমাছি ভর্তি। বলতে পারেন, এগুলো সব পোষা মৌমাছি। অনেক গুলো বাক্স রয়েছে এই বাগানে, প্রায় দেড়শ বা তার বেশী বাক্স হবে। তবে এই চাষ অবশ্য হারাধন দা'র নয়। যারা এই কাজ করেন, তাদের কে এখানে মৌয়াল বলে। শুনেছি যে মৌয়াল এখানে আছেন, তিনি আদতে সুন্দরবনের বাসিন্দা। সারা বছর তিনি তার এই মৌমাছি ভর্তি বাক্স গুলো নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে বেড়ান। এবছর শীতের শেষে তিনি তার এই মৌমাছি-পরিবার গুলো নিয়ে এই বাগানে এসে গুছিয়ে বসেছেন। সেই সময় এই অঞ্চলে সর্ষে আর ধনের প্রচুর চাষ হয়। এই মৌমাছি গুলো সেই সর্ষে ফুল বা ধনের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে এই বাক্সর ভেতর চাক বানায়। এই মৌমাছি'র কারণেই আমার এই বাগানে ঢুকতে বেশ ভয় লাগে। আমি আগে মৌমাছি হুল এর খোঁচা খেয়েছি। প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে। এদের থেকে দূরে থাকাই ভালো। তবে যদি মৌয়াল ভদ্রলোক রাজি থাকেন, তাহলে চেষ্টা করবো অন্য কোনও পর্বে মধু চাষের এই পুরো ব্যাপারটা আপনাদের দেখানোর। 

পুরো বাগানটাই ভীষণ শান্ত, সবুজ। কেবল প্রচুর পাখির আওয়াজ আর বাতাসের শব্দ। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেই সব টেনশন দূর হয়ে গিয়ে, মন যেমন শান্ত হয়ে যায়, তেমনই চোখ আর কান ও ভীষণ আরাম পায়। তবে হারাধন দা'র এই বাগান টা একেবারে রাস্তার ধারে। সেই জন্যই যখন রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ি যাচ্ছে, তখন গাড়ির যান্ত্রিক বিকট শব্দ বেশ কানে লাগে, বিশেষ করে হর্ন'এর আওয়াজ। হারাধন দা'র আরো একটা কলা বাগান আছে, ডাঙা মাঠে। সেই বাগানটা রাস্তা থেকে বেশ ভেতরে। সেখানকার পরিবেশ অবশ্য বেশ শান্ত।

যাইহোক, চলুন এবার আসল কথায় ফিরে আসি। আজ যে কারণে এই বাগানে এসেছিলাম, সেই কাজটাই এখনো করে উঠতে পারিনি। এখনো হারাধন দা বা দাদার ছেলে পীযূষ এর দেখা পাইনি। পীযূষ রা এই বাগানে নেই। মনে হচ্ছে আরও সকাল সকাল এসে হারাধন দা এই বাগানের কাজ শেষ করে অন্য বাগানে চলে গেছে। ডাঙা মাঠের বেলে ভুঁই এর ধারে হারাধন দা'র আরও একটা কলা বাগান আছে। হয়তো সেখানে গেলেই ওদের দেখা পাওয়া যাবে। চলুন বরং হাঁটতে হাঁটতে সেই বাগানের দিকেই যাই .........

অবশেষে হারাধন দা'র সাথে দেখা হল। দাদা অবশ্য এখন খুব ব্যস্ত। এবারে আর আমি খুব বেশী কিছু শোনাতে চাই না, বরং আপনারা দেখতে থাকুন আর আমাদের গল্পগুজব শুনতে থাকুন। 

পীযূষ কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছে। সাথে আমিও বাড়ি ফিরলাম। আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। ততদিন সকলে ভালো থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...


কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০২২ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 022]
২০শে বৈশাখ, ১৪৩০; (4th May, 2023), বৃহস্পতিবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা।  কামদেবপুরের স্কুলঘরের ডাঙায় আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি, আমি প্রবীর, দা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলে ভালো আছেন। শুরু করছি আরও একটা নতুন ভ্লগ। 

আজ সকাল সকাল একটু বাঁধের দিকে হাঁটতে বেড়িয়েছিলাম। তবে এই মুহূর্তে ফিরতি পথে আমি রয়েছি ইস্কুলঘরের ডাঙায়। সামনেই ডানদিকের ডাঙার উপরে এই হল কামদেবপুরের প্রাইমারী স্কুল। আর দূরের ঐ যে দোতালা বাড়িটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, ওটা হল হারু কাকার ছেলের বাড়ি, নিচে হারু কাকার সারের দোকান আর গোডাউন। ঐ বাড়ির ঠিক পাশেই একটা ছোটো বাঁশবাগান রয়েছে। সেখানেই সকালে হাঁটতে যাওয়ার সময় "ভিকে" দাদাকে লোকলস্কর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম। মনে হয় আজ বাঁশ কাটবেন। এইতো ঠিকই বলেছি, এরই মধ্যে তো দেখছি বেশ কয়েকটা বাঁশ কাটাও হয়ে গিয়েছে।  মনে হয়, দাদা বেড়া দেওয়ার জন্য অথবা মাচা করার জন্য বাঁশ কাটছেন। চলুন আজ সেদিকেই যাওয়া যাক। 

ইনি হলেন "ভিকে" দাদা। তবে মনে হয় এটি তাঁর আসল নাম নয়, ডাক নাম। এই নামেই তিনি এখানে পরিচিত। তাঁর আসল নাম অবশ্য আমি নিজেও জানিনা। যাই হোক, যেটা বলছিলাম, এখন দাদা খুব ব্যস্ত। অবশ্য সকলেই খুব ব্যস্ত, খুব মন দিয়ে কাজ করছেন। আসলে পাকা বাঁশের কোনও বড় ঝাড়ে বাঁশগুলো নিজেদের মধ্যে এমন ভাবে জড়িয়ে থাকে যে, ঝাড় থেকে কোনও একটা বাঁশ কেটে বের করে নিয়ে আসা, বেশ ঝামেলার কাজ। বেশ পরিশ্রমেরও বটে। তাই এখানে আমি আর বকবক করে খুব বেশী কিছু শোনাতে চাই না, বরং আপনারা দেখতে থাকুন, আর আমাদের গল্পগুজব শুনতে থাকুন।

... ... ... ... ...

... ... ... ... ...

প্রায় দশ মিনিট ধরে দু'জন মিলে চেষ্টা করে অবশেষে একটা বাঁশ কেটে ঝাড় থেকে বের করে আনতে সফল হলেন। এখন সহজেই অনুমান করা যায়, পছন্দ  মতো বাঁশ কেটে ঝাড় থেকে বের করে নিয়ে আসা কত ঝামেলার কাজ। আবার এখানে অনেককেই আমি একটা কথা বলতে শুনেছি, "বাঁশ কাটলেই মাস কাটে"। এখানে "মাস" মানে হচ্ছে শরীরের মাংস। অর্থাৎ ঝাড় থেকে বাঁশ কাটতে গেলেই, বাঁশের কঞ্চির খোঁচায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে বা ছিঁড়ে যায়। সেকারণে ঝাড় থেকে বাঁশ কাটার সময় বেশ সাবধানে কাজ করতে হয়। যাই হোক দাদা'র পটলের জমিতে খুঁটি আর মাচা করতে মনে হয় আরও বেশ কয়েকটা বাঁশ লাগবে। তাই সাবধানে ধীরে ধীরে বাঁশ কাটা চলতে থাকুক। ওদিকে হারু কাকার সারের দোকানের সামনের মাচালে বেশ আড্ডা জমে উঠেছে। চলুন একবার সেদিকে যাওয়া যাক। 

আড্ডা বেশ জমে উঠেছে। এই আড্ডা চলতেই থাকবে। এদিকে বেলা বেড়ে চলেছে। এখনো সকালের জলখাবার খাওয়া হয়নি। বেশ খিদেও পেয়েছে। একবার বাড়ির দিকে যেতে হবে। আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। ততদিন সকলে ভালো থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...


কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০২৩ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 023]
১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০; (27th May, 2023), শনিবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা।  কামদেবপুরের এই সুবিশাল বাঁশ বাগানে আপনাদের সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাচ্ছি, আমি প্রবীর, দা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলে ভালো আছেন। চলুন, শুরু করি আরও একটা নতুন ভ্লগ। 

তবে আজকের পর্বটি একটু অন্যরকম, আমার অন্য ভ্লগ গুলোর মতো নয়। আসলে আজ সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। আবার শরীর টাও ঠিক ভালো লাগছিল না। সেকারণে সকালে হাঁটতে যাওয়াও হয়নি। তাই ভাবলাম এখন একটু হেঁটে আসি। কিন্তু এখন বেলা বেশ বেড়েছে। সকাল প্রায় আটটা  বাজে। এখন আর রাস্তার দিকে যেতে ভালো লাগছে না। বরং চলুন আরও একবার বাঁশ বাগানে যাওয়া যাক। এই বাগানটা আমার ভীষণ প্রিয়। যত বারই আসি না কেন, প্রতিবারই মনে হয়, আজ যেন প্রথম এলাম। ভীষণ চুপচাপ, শান্ত আর নির্জন, একাকী নিজের সঙ্গে কাটানোর আদর্শ জায়গা। তবে আমি কিন্তু একেবারে একা নই। সাথে প্রচুর চেনা অচেনা পাখি, আর কাঠবিড়ালি। মাঝে মাঝে হনুমান আর শিয়ালের ও দেখা মেলে। যাইহোক এই শান্ত পরিবেশে আর বেশি বকবক করে লাভ নেই। বরং চলুন এই নির্জনতা উপভোগ করা যাক ... ... ...

... ... ... ... ...

... ... ... ... ...

আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। ততদিন সকলে ভালো থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...


কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০২৪ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 024]
৩রা আষাঢ়, ১৪৩০; (19th June, 2023), সোমবার।


Good afternoon বন্ধুরা। আমি প্রবীর, দা লেজি ভ্লগার। কামদেবপুরের এই ভ্লগে আপনাদের সকলকে আমন্ত্রন জানাচ্ছি। আজ আমি কামদেবপুরের ডাঙা মাঠে নয়, ওম'কে সঙ্গে নিয়ে বিল মাঠে ঘুরতে এসেছি। তবে আমি হেঁটে ঘুরলেও ওম'এর সাথে অবশ্যই সাইকেল রয়েছে। ও কখনো পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারে না। সবসময় ওর সাথে সাইকেল থাকবেই। এমনিতেই মোটর সাইকেল বা গাড়ী ওম'এর ভীষণ প্রিয়। চেনা কারো কাছে বাইক দেখলেই দাঁড়িয়ে পরে। তবে বয়স তো এখন কম, সেকারণে মোটর সাইকেল এখনো হাতে পায়নি, তাই সাইকেল ... ... । 

আজ ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলো মনে হচ্ছে একটু কালো হয়ে যাচ্ছে। এখন বিকেল, সূর্য একটু একটু করে পশ্চিম দিকে হেলে পরছে। তবে আলোর তেজ এখনো যথেষ্ট বেশি। এই আলোয় ভ্লগ করলে ছবিতে সবকিছুই অন্যরকম লাগে। সবকিছু কেমন যেন লাল রঙের মনে হয়।  বিশেষ করে আমার GoPro ক্যামেরায়,সরাসরি সূর্যের আলো পরছে বলে প্রায় সবকিছুই কালছে লাল হয়ে যাচ্ছে, এই ক্যামেরার এটাই এক অসুবিধা। তবে যদি সরাসরি আলো থেকে ক্যামেরা একটু বাঁচিয়ে ছবি তোলা যায়, তাহলে ভীষণ ভালো ছবি ওঠে। বাঃ!! পুকুরের জল কি পরিষ্কার দেখেছেন। উল্টো দিকের পাড়ের গাছ গুলোর কি সুন্দর জলে reflection পরেছে। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। আরও একবার ভালো করে দেখুন, এই হল সূর্য। আর ক্যামেরা আস্তে আস্তে পূর্বদিকে ঘোরালে, এই দেখুন, জলে কি সুন্দর reflection। অসম্ভব রকমের শান্ত, ধীর স্থির। 

যাইহোক যেটা বলছিলাম, আমি আর ওম বিল মাঠে ঘুরতে এসেছি। অবশ্য মাঠে এখন নামা যাবে না। মাঠ ভর্তি ধান লাগানো রয়েছে। এখনো বেশ ছোট গাছ, সবে লাগানো হয়েছে। সেকারণে জমি জলে ভর্তি, মাটি নরম ... ... হা হাহা ... ওনার ছবিও উঠে গেল বলে ওম'এর সাথে মজা করছিলেন, হাহা ... ... যা বলছিলাম, জমি জলে ভর্তি বলে মাটি বেশ নরম, আলপথও কাদায় ভর্তি, আমার পক্ষে এই আলপথে হাঁটা প্রায় অসম্ভব। এই দেখুন, সবে ধান রোয়ানো হয়েছে। এই সময় জমি জলে ভর্তি রাখতে হয়। ধানের গোঁড়া জলে ডুবিয়ে না রাখলে ধান লাল হয়ে যায়, ফলে ফলন কমে যায়। তাই আমাদের ডানদিকে এই যে পুকুরটা দেখছেন তার পাড় ধরে হাতছিলাম। বিলমাঠের ধারে এই গ্রামে এরকম বেশকয়েকটা পুকুর রয়েছে। তার মধ্যে এই পুকুরটা আমার বেশ লাগে। বেশ বড় পুকুর, পাড় বেশ পরিষ্কার, কোনও ঝোপ জঙ্গল নেই, নিশ্চিন্তে হাঁটা যায়। আর জলও বেশ পরিষ্কার। সেকারণেই বিকেলবেলা বিশেষ করে সূর্য ডোবার পরে যখন আকাশ গোধূলি আলোয় লাল হয়ে ওঠে, তখন সেই আলোর রিফ্লেকশন জলে পরে কেমন যেন একটা মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করে। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। 

দিনের আলো আস্তে আস্তে কমে আসছে। ওদিকে "অদি বুড়ি" হয়তো এতক্ষণে রেডি হয়ে বসে আছে, আমাদের সাথে মাঠে ঘুরতে আসবে বলে। চলুন একবার বাড়ির দিকে যাওয়া যাক, দেখি ওখানকার খবর কি ......

আজকের মতো সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুব দিয়েছে। গোধূলিবেলার শেষ সোনালী আলোটুকুও আকাশে মিশে গেছে। দিনের আলো এবারে আস্তে আস্তে কমে আসছে। তাই আজকের মতো সব কাজ শেষ করে এবার বাড়ি ফেরার পালা। ভেড়ার দলও তাদের ছানাপোনা সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছে। মাঝে ইস্কুলের সামনের ডাঙায় আরও কিছুটা পেট ভর্তি করে নিয়ে, সোজা বাড়ির পথ ধরতে হবে। এদিকে ইস্কুল ঘরের ডাঙায় খুব হৈচৈ। গ্রামের ছেলেদের ক্রিকেট খেলা চলছে। মনে হচ্ছে কেউ হয়তো "আউট" হওয়ার পরও ব্যাট ছাড়তে রাজি ছিল না। তাই সাময়িক সময়ের জন্য খেলা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয়েছে। 

ওদিকে অদি বুড়ি ওর দাদুর সাথে হারাধন'দার এই কলাবাগানে ঘুরতে এসেছে। আগের একটি পর্বে আপনাদের দেখিয়েছিলাম, সুন্দরবন থেকে এইজন মউয়াল তাঁর পোষা মৌমাছি ভর্তি বাক্স নিয়ে এই বাগানে এসে বসেছেন। এই বাগানেই তিনি অস্থায়ী ঘর বানিয়ে থাকেন। সেজন্যই বিকেল বেলা গ্রামের অনেকে এই বাগানে আড্ডা মারতে আসেন। অদি, ওর দাদুর সাথে এখানেই এসেছে। চলুন বাগানে যাওয়া যাক। 

বাগানে অনেক গুলো বাক্স রাখা দেখছি। প্রায় দেড়-দুশো বাক্স হবে। প্রায় প্রতিটা বাক্সই মৌমাছি ভর্তি। অর্থাৎ প্রায় দেড়-দুশো মৌমাছির চাক। এই মৌমাছির দল আশেপাশের মাঠঘাট বা জঙ্গল এর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে এনে এই বাক্সর ভিতরে চাক বানিয়ে সেখানে মধু ভর্তি করে। পরে সেই চাক ভর্তি হয়ে গেলে, মউয়াল চাক ভেঙ্গে মধু গেলে নিয়ে তা বাজারজাত করেন। এভাবে এখানকার কাজ শেষ হয়ে গেলে তিনি মৌমাছি ভর্তি বাক্স নিয়ে আবার অন্য কোনও স্থানে গিয়ে বসেন। এটাই তাঁর ব্যবসা। 

হারাধন'দা কলার কাঁদি কেটে আঠা ঝরানোর জন্য এখানে রেখে দিয়েছেন। এখান থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা সাইকেলে করে কাঁদি নিয়ে চলে যাবেন।  কাল ভোরবেলা এগুলো হাটে যাবে। এদিকে দিনের আলো শেষ হয়ে এলো। চলুন একবার সেই পুকুরের পাড় থেকে ঘুরে আসি। দেখে আসি শেষ বিকেলের আলোর ছটা পুকুরের জলে কতটা মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। 

আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। ততদিন সকলে ভালো থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...


কামদেবপুরের কথা : পর্ব ০২৫ [The Tales of Kamdevpur : Vlog 025]
২৯শে আষাঢ়, ১৪৩০; (15th July, 2023), শনিবার।


সুপ্রভাত বন্ধুরা। কামদেবপুরে আপনাদের সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাচ্ছি আমি প্রবীর, দা লেজি ভ্লগার। আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। ... ... ...

আজকের সকালটা বেশ সুন্দর। ঝকঝকে নীল আকাশ, সূর্য সবে উঠেছে, সোনালী রোদ্দুরে চারিদিক জ্বলজ্বল করছে। তবে রোদের তেজ এখনো খুব একটা বাড়েনি। দূরের আকাশে একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, এখনো অল্প কুয়াশার ভাব রয়েছে। বাঁশের পাতায় এখনো শিশিরের শেষ বিন্দু মিলিয়ে যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা থেকে এখানে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। তাই আবহাওয়া আজ বেশ মনোরম। গরম বেশ কম। এই পরিবেশে বাগানে হাঁটতে বেশ ভালো লাগে। বৃষ্টি হয়েছিল বলে আজ বাগানের মাটি একটু নরম, তবে কাদা তেমন কোথাও দেখছি না, হাঁটতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। কটা বাজে এখন? খুব একটা বেশি সকাল হয়নি। যখন বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলাম তখন ঘড়িতে পৌনে ছটা। এখন হয়তো খুব বড়োজোর সকাল ছয়টা হবে। এই সময় বাগানে এলে প্রচুর পাখির সাথে দেখা হয়। বেশ মজা লাগে। দাঁড়ান, আমি একটু চুপ করি, তাহলে আপনারও শুনতে পাবেন তাদের কথা। ... ... ...

এই দেখুন!! এখানে তো এখনো ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। ওদিকে দূরের আকাশে তাকিয়ে দেখুন, এখনো অল্প কুয়াশার মতো রয়েছে। যাইহোক, চলুন রাখুদের আমবাগানের ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হারাধন দা'র সেগুনের জঙ্গলের দিকে যাই।

ওরে বাবা !! এখানে তো দেখছি মাটি বেশ নরম। বৃষ্টির জলে কাদা হয়ে রয়েছে। আবার বেশ কিছুটা জায়গায় জল জমেও রয়েছে। মাটি কিন্তু এখানে বেশ পিছল।  তাই সাবধানে পা ফেলতে হবে। আমাদের মতো শহুরে লোকেদের যেকোনো মুহূর্তে পা পিছলে যেতে পারে। তবে অনেক বার গ্রামে আসার সুবাদে, আমার এরকম রাস্তায় বেশ চলার অভ্যাস আছে। এই রকম পরিবেশে সবসময় ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটতে হয়, তাহলে পা পিছলে যাওয়ার সম্ভবনা অনেক কম থাকে। এই দেখুন, এখানেও কাদা হয়েছে। সাবধানে পা ফেলে, আস্তে আস্তে হাঁটাই এখন বুদ্ধিমানের কাজ। যাইহোক যেটা বলছিলাম, চলুন হাঁটতে হাঁটতে হারাধন দা'র সেগুনের জঙ্গলের দিকে যাই। কারন মাঠ এখন ফাঁকা। কিছু জায়গায় পাট লাগানো থাকলেও এদিকের বেশির ভাগ জমিতে তিল লাগানো ছিল। সেই তিল কেটে সকলে জমি চাষ দিয়ে ফেলে রেখে দিয়েছে। একটা ফসল চাষ হয়ে যাওয়ার পর জমি নাকি কিছুদিন ফাঁকা ফেলে রাখতে হয়। এখানে অনেককে বলতে শুনেছি যে, "এক চাষের পর জমিকে কিছুদিন জিরোতে দিতে হয়"। তাই মাস খানেক পরে এই তিলের জমিতে সকলে ধান লাগাবেন। বর্ষার ধান। এখন সবে ধানের বীজ চারানো হয়েছে। ওদিকে পাট এখনো কাটার সময় আসেনি। তাই গ্রামের প্রায় সকলেই এখন ছুটির মেজাজে। মাঠে গেলে এখন কাউকেই পাওয়া যাবে না। তার চেয়ে বরং চলুন সেগুনের জঙ্গলের দিকেই যাই, একটু হেঁটে আসি।

বাঃ!! সামনে ঘন সবুজ আইড়ে বাগান টা দেখেছেন !! দেখলেই মন ভরে যায়। গাছ গুলো বেশ বড় হয়েছে। এবার মনে হয়, ফুল ধরবে। ... ... আমি মনে হচ্ছে একটু ভুল বললাম। গাছে তো দেখছি ফল ধরে গেছে ... তবে এখনো ছোট। আইড়ের ফল দেখতে অনেকটা মটরের মতো। কাঁচায় বেশ মিষ্টি। মুড়ি দিয়ে খেতে দারুন লাগে। আর ফল পেকে গেলে ডাল হয়। আইড়ের ডাল। অবশ্য আমরা শহুরে লোকজন একে অড়হর ডাল বলে জানি। যাইহোক হাঁটতে হাঁটতে প্রায় মাঠের দিকে চলে এসেছি। ঐ যে দূরে সেগুনের জঙ্গলটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে সূর্যের আলোয় ক্যামেরায় সব কিছু প্রায় কালো মনে হচ্ছে। এই দিকটা পূর্ব দিক। সেগুনের জঙ্গলে যেতে হলে, আমাদের এখন পূর্ব দিকেই হাঁটতে হবে। তাতে ছবি একটু কালো হলেও কিছু করার নেই। চলুন আলপথ ধরে হাঁটা যাক।

কিছুক্ষণ আগে বলছিলাম না, এদিকের মাঠে এখন কোনও ফসল নেই।  এই দেখুন, চারপাশের সব জমি ফাঁকা। তিল কাটার পর, একবার চাষ দিয়ে সবাই জমি ফেলে রেখে দিয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই এই জমি গুলোয় চাষ দিয়ে "কাদান" করে ধান লাগানো হবে। ঘন সবুজ ধানে ভরে উঠবে এই মাঠ। আজ এই ফাঁকা মাঠ দেখে মনে হচ্ছে ভীষণ ছোট। কিন্তু ফসল ভর্তি থাকলে এই মাঠ দেখে মনে হয় বিশাল। তখন এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঠিকমতো দেখতে পাওয়া যায় না। যাইহোক, হাঁটতে হাঁটতে প্রায় জঙ্গলের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। ওদিকে ভোরের কুয়াশা কেটে গিয়ে সূর্যদেব আস্তে আস্তে প্রখর হচ্ছেন। চলুন এবার জঙ্গলের ভিতরে ঢোকা যাক। আশাকরি ওখানে প্রচুর পাখির সাথে দেখা হবে। এখন দখিনা বাতাস একটু কম বইছে। জোরে বাতাস বইলে ক্যামেরায় একটা ঘড়ঘড় শব্দ ওঠে, ফলে পাখির কিচিরমিচির ঠিক মতো শোনা যায় না। আজ মনে হয় সেই অসুবিধা খুব একটা হবে না। তাই আমি এখন চুপ করছি। ভোরের সোনালী আলোয় এই জঙ্গল কেমন মায়াবী লাগে, আপনারা দেখতে থাকুন। আর শুনতে থাকুন, পাখির কিচির মিচির, ঝিঁঝিঁ'র ডাক। ... ... ...

আজ আর মাঠের দিকে গেলাম না। আসলে, এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে খুব ভালো লাগছিল। যাইহোক, এই পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরের পর্বে আবার দেখা হবে। সকলে ভালো থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। আর যদি আজকের পর্ব আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে প্লীজ লাইক করবেন এবং আমার চ্যানেল টি  সাবস্ক্রাইব করবেন। বাই ......

© Prabir Kumar Das ( The Lazy Vlogger )
֍ আমার ইউটিউব চ্যানেল ঃ youtube.com/@thelazyvlogger72

Back to top ...            Home ...


|| Page 01 |Page 02 |Page 03 || Page 04 || Page 05 || Page 06 || Page 07 ||